সাধারণ বীমা কর্পোরেশন একমাত্র রাষ্ট্রীয় সাধারণ বীমা প্রতিষ্ঠান যা সরাসরি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রত্যক্ষ নিয়ন্ত্রণ ও তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হয়। বাংলাদেশের সকল ধরণের সাধারণ বীমা ও পুনঃবীমা ব্যবসা করার জন্য বীমা কর্পোরেশন আইন ১৯৭৩ (এক্ট নং ৬) এর অধীনে ১৯৭৩ সালের ১৪ মে এটি গঠিত হয়। বর্তমানে সাধারণ বীমা কর্পোরেশন বীমা কর্পোরেশন আইন, ২০১৯ এর মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে।
সাধারণ বীমা কর্পোরেশন ১৯৮৪ সাল পর্যন্ত সাধারণ বীমা ব্যবসায় একমাত্র বীমা প্রতিষ্ঠান হিসাবে কাজ করতে থাকে। ১৯৮৪ সালে বাংলাদেশ সরকার ব্যক্তি মালিকানাধীন বীমা কোম্পানির অনুমোদন প্রদান করে এবং সে লক্ষ্যে বীমা কর্পোরেশন অধ্যাদেশ (সংশোধীত) ১৯৮৪ করে ।
সাধারণ বীমা কর্পোরেশন একটি শক্তিশালী অর্থনৈতিক ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত। সাধারণ বীমা কর্পোরেশন দেশের সবচেয়ে বড় বীমা প্রতিষ্ঠান। এর অনুমোদিত মূলধন ১৫০০ কোটি টাকা, পরিশোধিত মূলধন ৯০০ কোটি টাকা।
নিম্নে উল্লেখিত কিছু বৈশিষ্ট্যই সাধারণ বীমা কর্পোরেশনের মজবুত অর্থনৈতিক ভিত্তির কথা প্রমাণ করে।
যেমন- এটি একটি সরকারি প্রতিষ্ঠান, সাধারণ বীমা কর্পোরেশনের নিজস্ব সম্পদের কারণে মজবুত অর্থনৈতিক ভিত্তি, বাংলাদেশের একমাত্র পুনঃবীমাকারী প্রতিষ্ঠান, অফিসসমূহ বিস্তৃত নেটওর্কের আওতাভূক্ত, প্রচুর প্রশিক্ষিত ও দক্ষ জনশক্তি, বড় আকারের বিনিয়োগযোগ্য অর্থ, ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা, রাজশাহী এবং সিলেটে থাকা প্রচুর স্থাবর সম্পত্তি। বহুতল বিশিষ্ট সাধারণ বীমা টাওয়ার রাজধানীর বুকে একমাত্র গাড়ি রাখার টাওয়ার।
সাধারণ বীমা কর্পোরেশন ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ, আইডিএলসি ফাইন্যান্স লিমিটেড এবং লিজিং কোম্পানি, ন্যাশনাল টি কোম্পানি লিমিটেড, ন্যাশনাল হাউজিং ফাইন্যান্স এন্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড, আরামিট লিমিটেড, জাতীয় সঞ্চয় ব্যুরো প্রতিষ্ঠানসমূহের স্পন্সর শেয়ার হোল্ডার।
বিচক্ষণতার সাথে সকল প্রকার কার্যপদ্ধতি গ্রহণ করে সাধারণ বীমা কর্পোরেশন দেশের বৃহত্তর অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির জন্য কাজ করে থাকে। শুধুমাত্র এ ক্ষেত্রে নয়, সাধারণ বীমা কর্পোরেশন দেশের শিল্প ও বাণিজ্য ক্ষেত্রে গুটি কয়েক বৃহৎ কর প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের একটি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
বীমা কর্পোরেশন আইন, ২০১৯ এর ধারা ১৬(১) অনুযায়ী বাংলাদেশের সরকারি সম্পত্তি বা সরকারি সম্পত্তি সংশ্লিষ্ট কোন ঝুঁকি বা দায় সম্পর্কিত সকল প্রকার নন-লাইফ বীমা ব্যবসা সাধারণ বীমা কর্পোরেশন ১০০% (একশত ভাগ) অবলিখন (underwrite) করে এর ৫০% নিজের মধ্যে রেখে অবশিষ্ট ৫০% সকল বেসরকারি নন-লাইফ বীমা কোম্পানির মধ্যে সমহারে বন্টন করে দেয়। উল্লেখ্য, এই আইনের ধারা ১৬(৩) অনুযায়ী ধারা ১৬(১) এর বিধান লঙ্ঘন করে গৃহীত বা ইস্যুকৃত যে কোন বীমা বাতিল বলে গণ্য হবে।
পুনঃবীমা ব্যবসার ক্ষেত্রে, ঐ আইন এই মর্মে নির্দেশনা প্রদান করে যে কোম্পানির ৫০% পুনঃবীমা ব্যবসা বাধ্যতামূলকভাবে সাধারণ বীমা কর্পোরেশন এর সাথে করতে হবে আর বাকী ৫০% পুনঃবীমা ব্যবসা কোম্পানি চাইলে সাধারণ বীমা কর্পোরেশনে অথবা দেশি-বিদেশি যে কোন বীমাকারী প্রতিষ্ঠানের সাথে করতে পারবে।
নন-লাইফ বীমা ও পুনঃবীমা ব্যবসাই হল সাধারণ বীমা কর্পোরেশনের মূল স্তম্ভ। মোট প্রিমিয়াম আয়, বিস্তৃত অফিস নেটওয়ার্ক এবং দক্ষ জনশক্তির কারণে সাধারণ বীমা কর্পোরেশন বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় নন-লাইফ বীমা দায়গ্রহণকারী প্রতিষ্ঠান। এছাড়াও সাধারণ বীমা কর্পোরেশন বাংলাদেশে নন-লাইফ বীমা ব্যবসা পরিচালনাকারী বীমা প্রতিষ্ঠানসমূহের ঝুঁকির পুনঃবীমা করে থাকে।